সেইন্ট ইকার ক্যাসিয়াস: মাদ্রিদের একলব্য

আসুন একটা ঘটনাক্রম সাজাই:
১. মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৯৯-০০ উচল ফাইনাল জিতে সর্বকনিষ্ঠ গোলকিপার।
২. ২০০১-০২ উচল ফাইনালের ৬৮ মিনিটে রিয়াল গোলকিপার সিজার সানচেজের ইঞ্জুরি আর দৃপ্ত পায়ে বদলি হিসেবে নেমে তাঁর নেমে যাওয়া।
৩. একই ম্যাচের যোগ করা ৭ মিনিট, তিনটি অবিশ্বাস্য সেইভ।
৪. ৯৫/৯৬ মিনিটে বাস্টুর্কের শটটা ফিরিয়ে কর্ণারে দিলেন যখন তখন শুধু দুটো পা-ই গোললাইনের বাইরে, পুরো শরীর গোললাইনের ভেতরে, আর এই দুই পায়ে ফিরিয়ে দিয়েই কর্ণারে পাঠালেন।
৫. ৯৭ মিনিট, শেষ কর্ণার শট, উড়ে আসলো, বার্বাতভের হেডার, পোস্টের সামনে গিয়েই মাটি কামড়ে গোলের দিকে যাওয়া, অফ দ্য লাইনে এসে ক্যাসিয়াস আবারো পা দিয়ে লেভারকুসেনের শিরোপার কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দিলেন।
৬. এই ম্যাচে বদলি নেমেই নতুন শতকে বিশ্বের তর্কসাপেক্ষ অন্যতম সেরা গোলকিপারের লিগ্যাসির অমরত্বের যাত্রা শুরু, পৃথিবী জানলো তার নাম ইকার ক্যাসিয়াস ফার্নান্দেজ, আর পৃথিবী জানালো তিনি একজন সেইন্ট, সেইন্ট ইকার।

রিয়াল মাদ্রিদ-এ শুরু


উপরের ক্রমসূচিতে ১ নাম্বারটা বাদে বাকিগুলো একই ম্যাচের মাত্র শেষ ৩০ মিনিটের গল্প কণিকা(যোগ করা সময়সহ)। আমরা ওই ম্যাচের ৪৫ মিনিটে করা জিদানের ভলির সৌন্দর্যে এতোটাই বুঁদ হয়ে গিয়েছিলাম যে সদ্য কৈশোর পেরোনো ২১ বছরের ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার একজন লা ফ্যাব্রিকানের অনেকটা হেইমডালের মতো (থর সিনেমার এসগার্ডিয়ানদের বাইফ্রস্ট প্রটেক্টর) রিয়াল মাদ্রিদের গোলপোস্ট প্রটেক্টর হয়ে উঠার বিষয়টি কারো নজর না এড়ালেও মনোযোগ এড়িয়ে গিয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু, তাতে কি?? সেইন্ট ইকারের তাতে বয়েই গেছে!! উনি তো গ্লাভস হাতে রিয়াল মাদ্রিদের তেকাঠির সামনে একলব্যের মতো রয়্যাল গার্ড হবার যাত্রা শুরু করেই দিলেন। ভূমিকাতেই বলে রাখি, লা নভেনো জেতার জন্য জিদানের ভলি-ই হয়তো শিরোপা জিতিয়েছে কিন্তু ক্যাসিয়াসের বিশ্বস্ত হাত ও পা দুটো যদি অবিশ্বাস্যরকম না হতো তবে লেভারকুসেন শিরোপা কম হলে ৪-২ গোলে জিতে নিতো। জিদানের বা পায়ের অবিশ্বাস্য ভলি হয়তো আমাদের “মোনালিসা” এনে দিয়েছিলো কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না ক্যাসিয়াস সেখানে দ্য ভিঞ্চি হয়ে রঙ মাখিয়ে তার সৌন্দর্যকে দিয়েছে অনিন্দ্য রূপ।

মাদ্রিদের হয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়


বলছিলাম তাঁর সময়ে এবং আধুনিক ফুটবলের অন্যতম গ্রেট স্পোর্টসম্যান ও গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াসের কথা যাকে অন্তত আমার চোখে গত ২/৩ দশকের যে কয়েকজন মাদ্রিদিস্তাকে মাদ্রিজমকে উদাহরণ মনে করা হতো তাদের মধ্যে অন্যতম বলেই মনে হয়। গত শতকের শেষ ও বর্তমান শতকের শূণ্য দশকে রাউলকে যদি মাদ্রিদিজমের প্রতিক ধরা হয় তাহলে শূণ্য ও গত দশকের মাদ্রিদিজমের পতাকাবাহী হলো সেইন্ট ইকার।

একলব্য হয়ে উঠা


মাদ্রিদের নবম উচল জয়ের পরের মৌসুম থেকে গ্লাভস হাতে সত্যিকারের একলব্য হয়ে উঠেন, ২০০২-০৩ মৌসুমে থেকে রিয়াল মাদ্রিদ মাঠে মানেই গোলবারের নিচে ক্যাসিয়াস তার দুটি অবিশ্বাস্যরকম বিশ্বস্ত হাতজোড়া নিয়ে প্রবল প্রতাপে নিজের উপস্থিতি ও দক্ষতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে দিয়েছেন। মোটামুটিভাবে ২০১২-১৩ মৌসুমের আগ পর্যন্ত ইঞ্জুরি ব্যতিত এর ব্যাতিক্রম ঘটতে দেখা যায় নি। ইকারের দুর্ভাগ্য যে তার সেরা সময়ে মাদ্রিদ ছিলো ছন্নছাড়া এক ধনীর দুলাল, যে কিনা গ্যালাকটিকোস নিয়েও নিজেদের আর্চ রাইভাল বার্সার সোনালী দশকের নিচে চাপা পড়ে যায়। অস্থির মতি এক প্রেসিডেন্ট পেরেজের বর্ষার আকাশের মেঘের ঘন ঘন স্থান ও রঙ বদলের মতো কারণে অকারণে কোচ ছাঁটাই, লা লিগায় বার্সেলোনার আধিপত্য, চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা ব্যর্থতা, এতোসব হতাশাজনক সময়েও ক্যাসিয়াস ছিলেন আপন আলোয় উদ্ভাসিত।

মূলত দেল বস্কের ছাটাইয়ের সাথে ক্লদিও ম্যাকলেলে, ফার্নান্দো হিয়েরো ও ম্যাকনামানের বিদায়েই গ্যালাকটিকোর পারফর্ম ও ছন্দে ধ্বস নামতে থাকে। ক্লদিও ম্যাকলেলে ছিলো বস্কের তুরুপের তাস, হিয়েরো ও ম্যাকনামানের সাথে তার কার্যকর ডিফেন্স লাইন আর পেছনে ক্যাসিয়াসের সদর্প উপস্থিতিতে ৩ বছরে দুটি লিগ আর একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করার পরও অবিশ্বাস্যভাবে দেল বস্ককে বরখাস্ত করে রিয়াল মাদ্রিদ। সেখান থেকেই শুরু এক দীর্ঘ ছন্দপতনের, যে ছন্দ ফিরে পেতে দ্বিতীয় মেয়াদে এসে গ্যালাকটিকো-২ গড়তে হয়েছিল পেরেজকে।  যাই হোক, তবুও এই অফ ফর্মে থাকা ডিফেন্স লাইন নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন ক্যাসিয়াস। কখনও আবার স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে চরম লজ্জার হাত থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন।

মনে আছে ২০০৮-২০০৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের সেকেন্ড রাউন্ডের ম্যাচে অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচে রিয়ালের মাদ্রিদের ডিফেন্স কিভাবে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল? লিভারপুল গুণে গুণে দিয়েছিল ৪ টি গোল। তবুও সবার মুখে ছিল ক্যাসিয়াসকে নিয়ে প্রশংসার বাণী। কারণ সেদিন ক্যাসিয়াসের অবিশ্বাস্য ও অসাধারণ অ্যাক্রোব্যাটিক সেভগুলো না থাকলে স্কোরলাইনটা অনায়াসেই ৭-০ কিংবা ৮-০ এর লজ্জায় পরিণত হতো। এসব ম্যাচে যখন আপনি আপনার সতীর্থদের পিচে হতাশ ও হাল ছেড়ে দেয়া অবস্থায় দেখবেন তখন মনোবল দৃঢ় রেখে, হতাশাকে দূরে সরিয়ে আত্মবিশ্বাস এ দক্ষতা নিয়ে নিজের কাজটি সুন্দরভাবে করে যেতে পারা যে কতটা কঠিন তা ক্যাসিয়াস ছাড়া কারো বুঝার কথা নয়। ওই মৌসুমেই ইউরো ২০০৮ এ তার স্পেনীশ সতীর্থ রাউল গঞ্জালেসের অনুপস্থিতিতে স্পেন জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন আর্মব্যান্ড পান, পরবর্তীতে তার নেতৃত্বেই ২০০৮ এর ইউরো, ২০১০ এর বিশ্বকাপ, ২০১২ এর ইউরো কাপ জয় করেন। শুধু কনফেডারেশন কাপটাই জেতা হয় নি তার কখনোই।

অধিনায়ক ইকারের শুরু


অপরদিকে ২০০৯-১০ সিজনে রিয়ালের নিয়মিত ক্যাপ্টেন রাউল ও তার ডেপুটি গুতি যথাক্রমে বিদায় হবার পর ক্যাসিয়াস মাদ্রিদের ক্যাপ্টেন হিসেবে আর্মব্যান্ড পরিধান করেন। রিয়াল মাদ্রিদ সিনিয়র টিমে তার ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ৫টি লিগ শিরোপা, ২টি কোপা ডেল রে, ৪টি সুপার কোপা ডি এস্পানা, ৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ২টি উয়েফা সুপার কাপ, একটি ক্লাব বিশ্বকাপ এবং ১টি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ অর্জন করেন। ক্যাসিয়াস বিশ্বের তৃতীয় প্লেয়ার যিনি অধিনায়ক হিসেবে ইউরো, বিশ্বকাপ ও উচল জিতেছেন।

বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে স্পেন অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস



অসাধারণ রিফ্লেক্স, দুর্দান্ত পজিশনিং সেন্স এবং পা ব্যবহার করার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা দিয়ে ক্যারিয়ারজুড়ে  নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন অর্জনের উচ্চতায়। ওয়ান টু ওয়ানেও ক্যাসিয়াস অনন্য ছিলেন। উদাহরণ হিসেবে ২০০৯-২০১০ সিজনে লীগের ম্যাচে সেভিয়ার ডিয়েগো পেরোত্তির সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান সিচুয়েশনে যে অবিশ্বাস্য সেভটা করেছিলেন, তা দেখে গর্ডন ব্যাঙ্কস বলেছিলেন ইকারের রিফ্লেক্স অসাধারণ, এটা ধরে রাখতে পারলে সে একদিন সেরাদের সেরা হয়ে উঠতে পারবে। সেভিয়ার নেগ্রিদো মাটি কামড়ানো যে ক্রসটি করলেন পেরোত্তিকে তাক করে তখন ক্যাসিয়াস পেরোত্তির আগে পুরো জায়গাটা কাভার করে বলা যায় ছো মেরে বলটা হাতে নিয়ে নিলেন। পজিশনিং সেন্স ও ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এক ভয়ানক সৌন্দর্য সেদিন দেখতে পেয়েছে তাবৎ ফুটবল প্রেমিকেরা।
এছাড়া ২০০৮ ইউরো কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালির বিপক্ষে দুটো মহামূল্যবান পেনাল্টি সেভ করেন ক্যাসিয়াস।

ক্যাসিয়াসের বিশ্বকাপ


২০১০ বিশ্বকাপে গ্রুপ স্টেজের প্রথম ম্যাচে এক গোল খেয়ে হারের পরে গ্রুপের শেষ ম্যাচে চিলি তাকে একবার বিট করে এক গোল দিতে পেরেছিলো আর বাকিসব ম্যাচেই ছিলো তার ক্লিনশীট। ফাইনালে স্নেইডারের বাড়িয়ে দেয়া বল যখন রোবেনের পায়ে তখন রোবেন একদম একা, শুধু ইকার তার সামনে তার উপর ইকার ডানদিকে থাকায় রোবেন বামদিকের খালি জায়গায় শট নিলেও ইকার অসাধারণ রিফ্লেক্সে পা দিয়েই পাঠিয়ে দিলেন সাইডলাইনে। একই ম্যাচে রোবেন একা পুয়োল ও পিকের মতো ডিফেন্ডারদের ট্যাকল বিট করে ক্যাসিয়াসের কাছে ওয়ান-টু-ওয়ানে এসে দেখলো একটা দুর্ধর্ষ  চিল গ্লাভস হাতে ছো মেরে মুরগির বাচ্চার মতো বলটা ছিনিয়ে নিলো।

ওই মুহুর্তের রোবেনের মুখটা ভাবলে এখনো বিষাদে ছেয়ে যায় মন, এতোটা কাছে এসেও এক সেইন্টের কাছে হেরে যেতে হলো নেদারল্যান্ডসের। রোবেনকে হতাশায় ডুবিয়ে দেয়া দুটি সেভকে স্প্যানিশ ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্ম্যাশ বললেও অত্যুক্তি হবে না। অথচ ক্যাসিয়াস এই সেভ দুটোর ব্যাপারে কথা বলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিনয়ী। প্রথমটি তার মতে ৫০-৫০ চান্স ছিল, আর দ্বিতীয়টিতে পিকে আর পুয়োলকে ট্যাকলের জন্য ক্রেডিট দেন।

এখানেই ক্যাসিয়াস অনন্য ছিলেন, নিজেকে কখনও দলের চেয়ে বড় করে না দেখা আর দুই আর্চ রাইভাল টিমের সুপারস্টার খেলোয়াড়ে পূর্ণ একটা দলকে একসূতোয় গাথা, এই দুই পাঞ্চলাইন নিয়েই ‘ফুটবলের দুয়োরাণী’ হয়ে থাকার দুঃখ ভুলিয়ে সকার সিটি স্টেডিয়ামে সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন ইকার ক্যাসিয়াস, একইসাথে ২০১০ বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপার হিসেবে ‘গোল্ডেন গ্লোভস’ অ্যাওয়ার্ডটাও বগলদাবা করেন। তবে এতোসব অর্জনের পরেও খেলোয়াড় ক্যাসিয়াসের চেয়েও অধিনায়ক ক্যাসিয়াস আমার কাছে বেশি সফল বলেই রায় পাবেন কেননা তার সময়ে দুই রাইভাল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার প্লেয়ারদের মাঝে ক্লাবের হয়ে নিয়মিত রেষারেষির প্রভাবটা তিনি জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে কখনোই বিস্তৃত হতে দেননি। আমার মতে ঠিক এই কারণেই স্পেনের সোনালী প্রজন্ম সফল হতে পেরেছিল। এখানেই তিনি অধিনায়ক হিসেবে অনন্য।

চ্যাম্পিয়নস লীগ ট্রফি হাতে মাদ্রিদ ও স্পেন কিংবদন্তী

শেষের শুরু


*এবার আসুন অন্য একটা দৃশ্য কল্পনা করি!!
*তারিখ: ১২ জুলাই, ২০১৫ ।
*স্থান:সান্তিয়াগো বার্নাব্যু এর কনফারেন্স হল। রয়্যাল ব্লু কালারের শার্ট পরিহিত ইকার ক্যাসিয়াস। তার সামনে বসে আছে গোটা কয়েক ডজন ক্রীড়া সাংবাদিক। সাংবাদিকদের সামনে যিনি বসে আছেন, তাকে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেরা গোলকিপারের খেতাবটা চোখ বন্ধ করেই দিয়ে দেওয়া যায়। যার ঝুলিতে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অর্জনের পাল্লা অনেক ভারী। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১০২টি ক্লিনশিটের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে বেশি ৫৭টি ক্লিনশিটের মালিকও হলেন আমাদের ইকার। এছাড়া ২০০৭-২০০৮ মৌসুমে জেতা জামোরা ট্রফিটি তার মুকুটে পালক বৃদ্ধি করে।

এছাড়াও আছে ইউরোতে সর্বোচ্চ ৫০৯ মিনিট গোলবার অক্ষত রাখার রেকর্ড, উয়েফা টিম অফ দ্য ইয়ারে টানা ছয়বার যা গোলকিপারদের জন্য একটা রেকর্ড, ফিফপ্রো একাদশে সর্বোচ্চ ৫ বার, আইএফঅএফএইচএস ওয়ার্ল্ড বেস্ট জিকে হিসেবেও ৫ বার  ভূষিত হয়েছেন।  এতোদিন ধরে যার হাতে ছিলো রিয়াল মাদ্রিদের জাল অক্ষত রাখার দায়িত্ব সেই হাতে সেদিন ছিলো একটুকরো কাগজ, সামনে একটা মাইক, ঘন ঘন পলক ফেলে অশ্রু আটকানোর বৃথা চেষ্টারত মাদ্রিদের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম গোলরক্ষক ‘সেইন্ট’ ইকার ক্যাসিয়াস ফার্নান্দেজ। না, ইকার তার চোখে বাঁধ দিতে পারেন নি, ঝরঝর করে কান্না করে দিলেন আমাদের সবার প্রিয় সন্ত ইকার। আমার বিশ্বাস এই দৃশ্য কোন মাদ্রিদিস্তা সহ্য করতে পারে নি, মাদ্রিদিস্তা সবারই চোখ ভিজে উঠেছিলো অজান্তেই। আমরা সবাই চেয়েছিলাম এমন কিছু একটা হোক যাতে প্রিয় এই লা ফ্যাব্রিকান লিজেন্ড যেন তার ঘরেই থেকে যেতে পারেন। কিন্তু হলো না, চলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে দিলেন, পরবর্তী গন্তব্য পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তো।
যাই হোক শেষ করছি, কনফারেন্সে ইকারের মুখের শেষলাইনটা দিয়ে, যেখানে তিনি বলেন:-

“I’m sure in the future we’ll see each other. I’m not going to say goodbye, because it’s not goodbye. Hope to see you soon. Thank you, to all of you.”
ইয়েস, মিস্টার ইকার, এটা বিদায় নয়, এটিই একদিন নতুন শুরু এনে দেবে আপনার আর প্রানের রিয়াল মাদ্রিদের। হয়তো আপনি থাকবেন নতুন কোন রূপে অন্য কোন ভূমিকায়, সেদিনও আপনি হবেন রয়্যাল মাদ্রিদের রয়্যাল ফ্লাগ বিয়ারার!!



Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *